Wednesday, February 17, 2016

পুরুষদের অশ্লীল টিপ্পনীর প্রতিবাদে ‘ভয়ংকর’ জবাব দিয়ে সাড়া ফেললো স্কুল ছাত্রী এক কিশোরী !

তুমুল আলোচনার পেছনে যে ঘটনা

এবাআর ঋতুস্রাবের রক্তের দাগ সহ ট্রাউজার এবং পাশে পড়ে থাকা স্যানিটরি ন্যাপকিন-এর ছবি ফেসবুকে পোস্ট করেছেন কলকাতার এক স্কুল ছাত্রী।  সঙ্গে ক্ষুব্ধ একটা স্টাটাস।  জনমনে বেশ নাড়া দিয়েছে সেই লেখা। ব্যাপক লাইক কমেন্ট আর শেয়ারের ছড়াছড়ি এই ঘটনাকে ঘিরে।
ভারতের গনমাধ্যমগুলোতেও এই নিয়ে চলছে ব্যাপক চর্চা । একইসাথে বাংলাদেশের ফেসবুক ব্যবহারকারীদের মধ্যেও ব্যপক ভাইরাল হয়ে পড়েছে ঐ কিশোরীর ব্যতিক্রমি এমন প্রতিবাদের গল্প।
দশম শ্রেণীর ওই ছাত্রীর নাম আনুস্কা দাশগুপ্ত ( মিথি )। ঘটনার শুরুটা জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে প্রাইভেট শেষে রোজকার মত বাড়ি  ফিরছিল মিথি। সময় রাত আটটার কিছু পরে।  কিছুটা হাঁটা‚ তারপর মেট্রো‚ তারপর ১০ মিনিটের বাসপথ । এই ছিল মিথির সম্পূর্ণ যাত্রাপথ
রাত আটটার পরে মিথি  দাঁড়িয়েছিল এসস্প্ল্যানেড মেট্রো স্টেশনে। হঠাৎ আবিষ্কার করে‚ নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবাই তার দিকে অদ্ভুত চোখে তাকাচ্ছে।  ভেসে আসছে পুরুষদের অশ্লীল টিপ্পনী। কিছুটা বিব্রত হলেও  বুঝতে পারছিলনা মিথি ‚ কী হয়ে গেছে !
কেনইবা  সে সবার নজরের কেন্দ্রবিন্দু ? একমাত্র শিশুরাই দ্বিতীয়বার ফিরছে না তার দিকে । অনেক মহিলা আবার এসে মিথিকে কাছে এসে ফিস ফিস করে বলে যান‚ ‘ তুমি জামাটা নামিয়ে নাও‘ ।
শুনে ভাবতে থাকে কিশোরী‚ তাহলে তার জামার ঝুল নিয়েই এত সমস্যা !কিন্তু এমন কিছু খাটো পোশাক তো সে পরেনি | ভুল ভাঙল আর এক মহিলার দৌলতে | তিনি এসে সরাসরি মিথিকে একটি স্যানিটরি ন্যাপকিন দেন | এতক্ষণে বুঝতে পারে মিথি ‚ কী হয়েছে ! দেখে‚ তার ট্রাউজারের পিছনে অনেকটা অংশ জুড়ে লাল দাগ | কিশোরী বুঝতেই পারেনি‚ কখন শুরু হয়ে গেছে পিরিয়ডস |
Image
নিজের সেদিনের হেনস্থার জবাব দিতে ফেসবুককেই বেছে নেয় নামী স্কুলের এই ছাত্রী | রক্তমাখা ট্রাউজার আর ন্যাপকিনের ছবি পোস্ট করে সে | লেখে‚ যেসব মহিলা আমাকে এসে জামা নামাতে বলেছিলেন‚ তাঁদের বলছি‚ আমি ওই রক্তের দাগ বা আমার নারীত্ব নিয়ে আদৌ লজ্জিত নই |
এরপর তোপ দাগে পুরুষদের প্রতি | মিথি  বলে‚ যেসব পুরুষরা টিপ্পনী দিয়েছেন তাঁদের বলছি‚ যত খুশি আমাকে দেখুন | আমি লজ্জিত নই | কেন লজ্জা পাব ? আমি আপনাদের শেখাবো কী করে স্যানিটরি ন্যাপকিন ব্যবহার করতে হয় ।
আর শিশুদের উদ্দেশে মিথি  বলেছে‚ তোমরা জীবনে কোনওদিন যেন রক্তের দাগ নিয়ে লজ্জা পেয়ো না।  এরকম দাগ অনেক বার অনেক জায়গায় লাগবে ।  এমনকী যুদ্ধক্ষেত্রেও ।  তোমরা সব দ্বিধা সরিয়ে সমাজের কুসংস্কারের বিরুদ্ধে লড়বে ।  লজ্জা পেয়ে গেলে কিন্তু সেটা সম্ভব হবে না ।
মিথি জানিয়েছে তার সঙ্গে ন্যাপকিন ছিল না | কিন্তু সাহসী কিশোরীর প্রশ্ন‚ থাকলেই বা কী হত ? রাস্তাঘাটে মেয়েদের জন্য পরিচ্ছন্ন টয়লেট থাকে? মেট্রো স্টেশনে আছে ? তাহলে সঙ্গে ন্যাপকিন থেকে কী লাভ ? নোংরা টয়লেটে যাওয়ার থেকে জামায় রক্তের দাগ লাগা ভাল ।
সার্বিক ভাবে মহিলাদের উদ্দেশে মিথি বলতে চায়‚ কোনও মেয়ের পোশাকে রক্তের দাগ থাকলে তাকে প্লিজ স্পষ্ট করে বলুন | সম্ভব হলে এগিয়ে দিন স্যানিটরি ন্যাপকিন | শুধু গিয়ে রক্তের দাগ ঢাকতে পরামর্শ দেবেন না | সাহসিনীর ভাইরাল পোস্ট শেষ হয়েছে এই বলে ‘I AM NOT ASHAMED. I AM NOT ON MY *period*. I AM ON MY PERIOD…
সোশ্যাল সাইটে প্রশংসায় ভেসে গেছে অনুষ্কার বলিষ্ঠ বক্তব্য | আবার এসেছে পাল্টা সমালোচনাও | অনুষ্কা জানিয়েছে‚ তিনি খুশি যে মহিলাদের ঋতুস্রাবের মতো ট্যাবু নিয়ে খোলাখুলি আলোচনা হচ্ছে | এবং তার সূত্রপাত তার লেখা ঘিরে |
মিথির পোস্টকে ঘিরে  প্রগতিশীল ভাবনার বাংলাদেশি একজন জনপ্রিয় ফেসবুকার ক্যামেলিয়ার মন্তব্য, ‘আমাদের দেশেও এই রকম সাহসী সতেচন মেয়ে আছে , চুড়া নামের একটি মেয়ের লেখা পড়ে ছিলাম এই বিষয়ে , ১৭ বছরের ইতু কে লিখতে দেখছি সমাজের অন্ধতার বিরুদ্ধে।প্রীতি তো রিতিমত লড়াই করা মেয়ে।
এই কিশোরীরা আজকাল বেশ প্রতিবাদ করে । অথচ এই বয়সে এত সাহস আমার ছিল না। সমাজটা সাহসী মেয়েতে ভরে উঠুক। ভীরের মাঝে নোংরা হাতগুলো ভেঙে দেবার মত শক্তি অর্জন করুক। আর স্পস্ট করে বলুক , মাতৃত্বে প্রক্রিয়া লজ্জার হলে জন্মটাও লজ্জার । সেই অর্থে মানুষগুলোও সব অপবিত্র ।’

Unknown

Author & Editor

Has laoreet percipitur ad. Vide interesset in mei, no his legimus verterem. Et nostrum imperdiet appellantur usu, mnesarchum referrentur id vim.